ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করা হলেও, সেই অনুরোধ ফিরিয়ে দিয়েছে ভারত। এই বিষয়ে অবগত সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে ভারতের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস।
ইকোনমিক টাইমস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা ভারতের ঘনিষ্ঠ মিত্র। ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ বিবেচনায় তাকে ফেরত না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। তাদের মতে, হাসিনাকে ফেরত পাঠালে প্রতিবেশী মিত্রদের কাছে ভুল বার্তা যাবে।
উচ্চপর্যায়ের সূত্র উল্লেখ করে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের চাপ সত্ত্বেও ভারত তাড়াহুড়ো করে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চায় না। বিষয়টি তারা সতর্কতার সঙ্গে পর্যালোচনা করছে এবং এতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে।
ভারতের মতে, শেখ হাসিনা ভারতের স্বার্থ রক্ষা করেছেন। তিনি উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়িয়েছেন। এই প্রেক্ষাপটে তাকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সময় নিচ্ছে তারা।
এছাড়া, ভারত-বাংলাদেশ প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা অনুরোধ কার্যকর করার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, শেখ হাসিনার বর্তমান অবস্থান ভারতের মাটিতে থাকায় আওয়ামী লীগের মনোবল বাড়বে এবং তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
ভারত দাবি করেছে, তারা সবসময় রাজনৈতিক আশ্রয়ে অতিথি গ্রহণের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। তিব্বতের আধ্যাত্মিক নেতা দালাই লামার উদাহরণ টেনে বলা হয়েছে, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার পর শেখ হাসিনাও ভারতে নির্বাসিত ছিলেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনা যদি বাংলাদেশে ফেরেন, তবে তার জন্য একটি অনিশ্চিত ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হতে পারে। এজন্য ইস্যুটি জটিল এবং সময়সাপেক্ষ।